ট্রাভেলারদের জন্য সেরা ৫টি পাওয়ার ব্যাংক

ভ্রমণপিপাসু হোন কিংবা কাজের প্রয়োজনে ঢাকার বাইরে যান, ফোনের চার্জ শেষ হয়ে যাওয়াটা যেকোনো ট্রাভেলারের জন্য সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন। বাসে বা ট্রেনে অনেক সময় চার্জিং পোর্ট কাজ করে না, আবার পাহাড়ি এলাকায় বিদ্যুৎ পাওয়া মুশকিল।

তাই ব্যাগের এক কোণায় একটি শক্তিশালী পাওয়ার ব্যাংক থাকা চাই-ই চাই। কিন্তু বাজারে হাজারো অপশনের ভিড়ে কোনটি কিনবেন? কোনটি ফ্লাইটে নেওয়া যাবে আর কোনটি ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে?

আজকের ব্লগে আমরা শেয়ার করবো ২০২৫ সালে বাংলাদেশের বাজারে ট্রাভেলারদের জন্য সেরা ৫টি পাওয়ার ব্যাংক, যা আপনার বাজেট এবং প্রয়োজনের সাথে পারফেক্টলি মিলে যাবে।

পাওয়ার ব্যাংক কেনার আগে যে ৩টি বিষয় ট্রাভেলারদের জানা জরুরি

  • ক্যাপাসিটি (mAh): ট্রাভেলের জন্য ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ mAh সেরা। এর বেশি হলে ওজন বেড়ে যাবে যা বহন করা কষ্টকর।
  • ফ্লাইট রুলস (Flight Rules): আপনি যদি বিমানে ভ্রমণ করেন, তবে ১০০Wh (ওয়াট-আওয়ার) এর বেশি ক্ষমতার পাওয়ার ব্যাংক কেবিন ব্যাগে নেওয়া নিষিদ্ধ। সাধারণত ২০,০০০ mAh পর্যন্ত পাওয়ার ব্যাংক সেফ।
  • পোর্ট এবং স্পিড: এখনকার ফোনে PD (Power Delivery) বা QC 3.0 সাপোর্ট থাকা জরুরি। খেয়াল রাখবেন যেন Type-C পোর্ট দিয়ে ইনপুট এবং আউটপুট দুটোই হয়।

Xiaomi 33W Power Bank Pocket Edition Pro (সেরা কম্প্যাক্ট)

আপনি যদি এমন পাওয়ার ব্যাংক চান যা পকেটে রেখেই ঘোরাঘুরি করা যায়, তবে শাওমির এই পকেট এডিশনটি আপনার জন্য। এটি সাইজে ছোট কিন্তু কাজে দুর্দান্ত।

ক্যাপাসিটি 10,000 mAh
আউটপুট 33W Max (PD Support)
দাম (আনুমানিক) ২,৬০০ - ২,৮০০ টাকা
কেন কিনবেন? (Pros)
  • ভীষণ ছোট ও হালকা।
  • ৩৩ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং (Xiaomi ফোন দ্রুত চার্জ হয়)।
  • প্রিমিয়াম বিল্ড কোয়ালিটি।
অসুবিধা (Cons)
  • দাম কিছুটা বেশি।
  • গ্লসি ফিনিশ হওয়ায় স্ক্র্যাচ পড়ে।

Baseus Adaman 65W 20000mAh (ল্যাপটপ ও ক্যামেরা ইউজারদের জন্য)

যারা ভ্লগিং করেন বা সাথে ম্যাকবুক/ল্যাপটপ রাখেন, তাদের জন্য সাধারণ পাওয়ার ব্যাংকে কাজ হবে না। আপনার দরকার হাই ভোল্টেজ। Baseus এর এই মডেলটি দিয়ে আপনি ল্যাপটপও চার্জ দিতে পারবেন!

ফিচার হাইলাইট: মেটাল বডি এবং এতে একটি ডিজিটাল ডিসপ্লে আছে যা ভোল্টেজ এবং ব্যাটারি পার্সেন্টেজ দেখায়।

  • ক্যাপাসিটি: ২০,০০০ mAh
  • দাম: ৪,৫০০ - ৫,০০০ টাকা
  • বিশেষত্ব: ৬৫ ওয়াট আউটপুট (ল্যাপটপ চার্জ যোগ্য)।

Anker PowerCore 533 (সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য)

যাদের বাজেটের চেয়ে কোয়ালিটি এবং সেফটি বেশি জরুরি, তাদের জন্য Anker হলো পাওয়ার ব্যাংকের অ্যাপল। এটি আপনার দামী আইফোন বা ফ্ল্যাগশিপ ফোনের ব্যাটারি হেলথ নষ্ট করবে না।

ক্যাপাসিটি 10,000 mAh
আউটপুট 30W (High Speed)
দাম (আনুমানিক) ৪,০০০ - ৪,২০০ টাকা

কেন সেরা: এতে এক্টিভ শিল্ড (ActiveShield 2.0) প্রযুক্তি আছে যা তাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ফোনকে সুরক্ষিত রাখে।

Redmi 20000mAh Fast Charge (বাজেট কিং)

বাংলাদেশে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি বিক্রিত পাওয়ার ব্যাংক এটি। কম দামে ২০,০০০ mAh এর বিশাল ব্যাকআপ চাইলে এর কোনো বিকল্প নেই। লম্বা বাস বা ট্রেন জার্নির জন্য এটি সেরা।

  • ✅ দুইবার ফুল চার্জ দেওয়ার পরেও চার্জ থাকে।
  • ✅ ডুয়াল ইনপুট পোর্ট (Micro USB + Type C)।
  • ✅ স্ক্র্যাচ রেসিস্ট্যান্ট বডি।
  • ❌ ওজন কিছুটা বেশি (প্রায় ৪৫০ গ্রাম), তাই পকেটে রাখা কঠিন।

বর্তমান দাম: ২,০০০ - ২,২০০ টাকা।

Remax RPP-296 20000mAh (একদম সস্তা)

বাজেট যদি খুব টাইট থাকে (১,৫০০ টাকার নিচে), তবে রিম্যাক্স এর এই মডেলটি দেখতে পারেন। এটি খুব বেশি ফাস্ট চার্জিং না দিলেও সাধারণ ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট।

সাধারণ ইউজার এবং স্টুডেন্টদের জন্য এটি ভালো অপশন। তবে খুব দামী ফোনে এটি ব্যবহার না করাই ভালো, কারণ এর ভোল্টেজ রেগুলেশন Anker বা Xiaomi-র মতো উন্নত নয়।


তুলনা

এখনও কনফিউজড? এক নজরে দেখে নিন আপনার জন্য কোনটি সেরা:

  • আপনি যদি iPhone বা Samsung ইউজার হন এবং বাজেট থাকে ➝ Anker 533 কিনুন।
  • আপনার ফোন যদি Xiaomi/Redmi/Poco হয় এবং হালকা চান ➝ Xiaomi Pocket Edition সেরা।
  • লং ট্যুরে ল্যাপটপ চার্জ দিতে চান ➝ Baseus Adaman 65W
  • বাজেট কম কিন্তু বেশি ব্যাকআপ চাই ➝ Redmi 20000mAh

ট্রাভেলারদের জন্য বোনাস টিপস:

পাওয়ার ব্যাংক কেনার সময় অবশ্যই ওয়ারেন্টি স্টিকার দেখে কিনবেন। বাংলাদেশে এখন প্রচুর নকল Xiaomi এবং Remax পাওয়ার ব্যাংক পাওয়া যায়। তাই Gadget & Gear, Motion View বা বিশ্বস্ত অনলাইন শপ থেকে কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ।

আপনার পরবর্তী ট্রিপের জন্য কোনটি পছন্দ করলেন? কমেন্ট করে আমাদের জানান!

Post a Comment

Previous Post Next Post